Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সবজি : পুষ্টি নিরূপণ ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে করণীয়

সবজি : পুষ্টি নিরূপণ ও  রপ্তানি বৃদ্ধিতে করণীয়

ড. ফেরদৌসী ইসলাম১ ড. একেএম কামরুজ্জামান২
খাদ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য এই তিনটি শব্দ একটি আরেকটির সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। সুস্থ, স্বাস্থ্যবান ও সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য নিরাপদ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্যের বিকল্প নাই। তাই সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ মনের জন্য প্রতিদিন পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্যে গ্রহণ করা প্রয়োজন। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে হলে একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির জন্য সুষম খাদ্য নির্বাচন, খাদ্যের সহজলভ্যতা ও পুষ্টিমূল্য বজায় রেখে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ২২০ গ্রাম সবজি গ্রহণ করা উচিত কিন্তু প্রকৃত পক্ষে আমরা গ্রহণ করছি মাত্র ১২৫ গ্রাম (সূত্র: এফএও, ডিএই)। প্রয়োজনের তুলনায় কম খাদ্য গ্রহণের মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত উৎপাদনের স্বল্পতা। এ ছাড়াও পরিমিত পরিমাণে সবজি গ্রহণের অভ্যাসও গড়ে তুলতে হবে। বছরব্যাপী সবজি চাষ পারিবারিক পুষ্টি চাহিদার পাশাপাশি দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়ক হবে। শাকসবজির পারিবারিক চাহিদা মেটাতে খুব একটা বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। আমাদের বাড়ির আনাচে কানাচে পড়ে থাকা জমিগুলো পরিকল্পিতভাবে পুষ্টিসমৃদ্ধ শাকসবজি চাষের আওতায় আনা হলে তা থেকে সারা বছর পরিবারের সবার চাহিদা পূরণের মাধ্যমে অপুষ্টিজনিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে সরকারি কার্যক্রমের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলেই পুষ্টিকর খাদ্য জোগানের মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত জনপদ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিরাপত্তা একে অপরের পরিপূরক। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (SDG)-২০৩০ এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো টেকসই কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন। বিগত এক দশকে দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টরে অভাবনীয় সফলতার সাথে সাথে কৃষি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে এবং দানাজাতীয় খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি যখন নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের দিকে ধাপে ধাপে এগোচ্ছিল, তখনই বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে দেখা দিলো কোভিড-১৯। এই কোভিড-১৯ কে মোকাবিলা করার জন্য এবং মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শাকসবজি গ্রহণের গুরুত্ব অপরিসীম।
সবজির পুষ্টি 
শাকসবজি হলো ভিটামিন, খনিজ এবং আঁশ সমৃদ্ধ সাশ্রয়ী মূল্যের খাদ্য যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। শাকসবজি প্রতিরক্ষামূলক খাদ্য এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহের মাধ্যমে ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য এর মতো অনেক কঠিন/গুরুত্বপূর্ণ রোগ প্রতিরোধ করে। একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য ২২০০ শপধষ (একজন ব্যক্তির/দিনের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা) পেতে দানাজাতীয় শস্য, মাছ, মাংস,   শাকসবজি, ফলমূল, তেল ইত্যাদি বিভিন্ন অনুপাতে বিভিন্ন খাবার গ্রহণ করা উচিত। অপুষ্টিকর খাদ্য, অতিরিক্ত রান্না করা, বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর পুষ্টিকর মূল্য সম্পর্কে অজ্ঞতা, বাংলাদেশের অপুষ্টিজনিত ব্যাধিগুলোর কারণ হিসাবে চিহ্নিত। সবজি পুষ্টিমান ও কার্যকলাপ সারণি দ্রষ্টব্য। 
‘খাদ্য ও পুষ্টিতে স্বয়ম্ভরতা অর্জন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সবজি বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সবজি বিভাগ ৮০টির বেশি প্রচলিত ও অপ্রচলিত সবজির উপর গবেষণা করে এ পর্যন্ত মোট ৩৪টি সবজির ১৩৪টি উন্নত জাত (ওপি-১১১ ও হাইব্রিড-২৩) উদ্ভাবন করেছে। তাছাড়া প্রধান প্রধান সবজির উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি, অমৌসুমে সবজির আবাদ, নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আবাদ, প্রটেকটিভ নেট হাউজ এ সারা বছর নিরাপদ সবজি উৎপাদন প্রযুক্তি, হাইড্রোপনিক চাষাবাদ প্রযুক্তি, জৈব চাষাবাদ প্রযুক্তি এবং বীজ উৎপাদনের প্রযুক্তিসহ মোট ৫২টি সবজি উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। বর্তমানে সবজি বিভাগ নতুন নতুন ওপি, হাইব্রিড জাত উন্নয়ন, নিরাপদ শাকসবজির উৎপাদন, অমৌসুমের জাত উদ্ভাবন, লবণাক্ততা, বন্যা, খরা, উচ্চ তাপসহনশীল জাত উদ্ভাবন, কীটপতঙ্গ, রোগ নিয়ন্ত্রণ, মাটি এবং পানি ব্যবস্থাপনা এবং পোস্ট হারভেস্ট প্রযুক্তি বাবস্থাপনা বিষয়ক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত প্রাকৃতিকভাবে সমস্যাসংকুল এলাকার (যেমন: পাহাড়, উপকূলীয়, হাওর ও বরেন্দ্র এলাকাসমূহ) ঝুঁকি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছে। এই ধরনের গবেষণা বিদ্যমান প্রযুক্তিগুলোকে উন্নত ও উপযোগী করবে, ফলন পার্থক্য কমাবে, বৈচিত্র্য বাড়াবে। প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, কৃষিকাজে বৃষ্টি ও নদীর পানির ব্যবহার, রোগ ও বালাই নিয়ন্ত্রণ, উচ্চমূল্য ফসলের জাত উন্নয়ন ও ফসল সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তির জন্য উদ্ভাবিত জাতের উপযোগী কৃষি উপকরণ প্রযুক্তি, যান্ত্রিকীকরণ ইত্যাদি নিশ্চিত করবে। এ ধরনের গবেষণা প্রতিকূল পরিবেশ সহিষ্ণু, স্বল্পমেয়াদি শস্যজাত উন্নয়ন ও প্রচলনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি জমি কমতে থাকাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী     প্রকৃতি মোকাবিলা করে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বর্তমানে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল। 
বাংলাদেশে উৎপাদিত সবজির গুণগতমান বজায় রেখে পুষ্টিকর সবজি বিভিন্ন দেশে রপ্তানির হচ্ছে। কিন্তু এই রপ্তানি আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। গুণগত মানসম্পন্নভাবে উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে বিক্রির অতিরিক্ত অংশ কিছুটা বেশি লাভ পেতে বিদেশের বাজারে রপ্তানি করা যায়। এটি বাংলাদেশের জন্য রেমিট্যান্স আদায়ের অন্যতম উপায় হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৬০ প্রকারের বেশি সবজি ৪০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি হয়। গত ১০ বছরে বাংলাদেশী সবজির রফতানি ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। 
সবজির রফতানি কে বেগবান করার জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে তা হলো- রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধী, দীর্ঘ দিন সংগ্রহ উপযোগী বিভিন্ন সবজির রফতানিযোগ্য উন্নত জাত উদ্ভাবন। সারাবছর উৎপাদন উপযোগী জাত উদ্ভাবন। প্রটেকটিভ শেড-নেট হাউজে সারাবছর গুণগত মানসম্পন্ন,  উচ্চমূল্যের নিরাপদ সবজি উৎপাদন। সবজি উৎপাদনে উত্তম কৃষি চর্চা অনুসরণ। সবজির সংগ্রহের উপয্ক্তু সময় নির্ধারণ করা। পরিপক্ব টমেটোতে ১-গঈচ প্রয়োগের মাধ্যমে সংরক্ষণকাল বাড়ানো। ব্লানিচং পদ্ধতির মাধ্যমে গাজরের সংরক্ষণকাল বাড়ানো। এনজাইম নিষ্ক্রিয়তার মাধ্যমে মটরশুঁটির সংরক্ষণকাল বাড়ানো। পরিপক্ব সবুজ কলার ২০+২ক্ক সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় এবং ৮৫-৯০% আর্দ্রতায় প্রতি লিটারে ৪০০ মাইক্রো গ্রাম ১-MCP প্রয়োগ করে পরিপক্বতার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা এবং ৩০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ কাল বৃদ্ধি করা। রপ্তানিযোগ্য সবজির জন্য নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা। সবজির রফতানিকে বেগবান করার জন্য যে পদক্ষেপগুলো নিতে হবে তা হলো- রপ্তানির জন্য সবজির ক্রপ জোনিং করা। বাংলাদেশ এঅচ স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করা। চুক্তিবদ্ধ চাষ (contract farming ) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ GAP স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার Adaptive trial করা। উন্নত সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার উপর গবেষণা এবং উন্নত প্যাকেজিংয়ের ব্যবস্থাপনা ও শীতাতাপ (Cooi temperature) ব্যবস্থাপনার উপর গবেষণা করা। রপ্তানির পূর্বে স্বল্পসময় বা দীর্ঘসময় সংরক্ষণের জন্য ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রায় কোল্ড চেম্বার রাখার উপর গবেষণা অব্যাহত রাখা ।
সর্বোপরি আমরা কি খাচ্ছি এবং সেটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু দরকার, সে খাবার থেকে কতটুকু পুষ্টি অথবা শক্তি পাব সেটির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জাতীয় সবজি মেলা ২০২২ সাফল্য কামনা করছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউশনন হবে ক্ষুধামুক্ত নিরাপদ খাদ্য পুষ্টিসমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার গর্বিত অংশীদার। 
লেখক : ১মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সবজি বিভাগ, বিএআরআই। মোবাইল : ০১৭১৪০০৪৩০৩, ই-মেইল :cso.geg.hrc@gmail.com ২প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সবজি বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, গাজীপুর। মোবাইল : ০১৭৫৪১১২০৫০, ই-মেইল :akmqs@gmail.com 

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon